রফিকুল ইসলাম তুষার ,
পাবনা সুজানগর প্রতিনিধি: পাবনার সুজানগর উপজেলার ভায়না গ্রামের হতদরিদ্র শহিদুল্লাহ ও তানিয়া দম্পত্তির ঘরে জন্মনেয় মেয়ে সুমাইয়া। পৃথবীর সকল বাবা-মায়ের কন্যা সন্তান তাদের কাছে রাজকন্য। সুমাইয়াও তার ব্যতিক্রম ছিলো না। কিন্তু মা তানিয়া খাতুন ইদানীং লক্ষ করছেন তাঁর তিন বছর বয়সী বাচ্চার এক চোখ কালামনির ভিতরে রাতে বিড়ালের চোখের মতো জ্বলজ্বল করছে। প্রথম দিকে তিনি এটিকে গুরুত্ব না দিলেও পরে পাবনা চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে গেলেন পরামর্শের জন্য। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন যে, এই রোগটির নাম ‘রেটিনোব্লাস্টোমা’। এই বিরল রোগ রেটিনোব্লাস্টোমা’ হচ্ছে চোখের টিউমার ক্যান্সার। মা তানিয়া খাতুনের চোখে ঘুম নেই, স্বামীর অস্বচ্ছলতা, পরিবার দিশেহারা ৩ বছরের কন্যার চোখে টিউমার ক্যানসার।বাবা শহিদুল্লাহ ভূমিহীন কৃষক, আদরের কন্যার এই বিরল রোগ দেখে কোন কাজে যেতে পারে না।মা বলে আর বুকের মধ্যে আসে না সুমাইয়া। অসহায় এই মা মেয়ের কষ্ট দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছে না। সহযোগীতা চায় সমাজের বৃত্তবান মানুষের কাছে, তার কন্যার সু-চিকিৎসার জন্য। জানাযায়, ১৫ থেকে ১৮ হাজার শিশুর মধ্যে হয়তো একজন এই ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। প্রাথমিকভাবে এটি পাঁচ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। ১০ বা বেশি বয়সীদের রেটিনোব্লাস্টোমাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম। তবে সবার এই ধরনের রোগ হয় না। এটি এক চোখে কিংবা দুই চোখেই হতে পারে। দুই চোখে আক্রান্ত হলে সাধারণত এক বছরের মধ্যে এবং এক চোখে আক্রান্ত হলে সাধারণত দুই বছরের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায়। রেটিনোব্লাস্টোমা হলো রেটিনার অপরিপক্ব কোষ, যা আমাদের প্রারম্ভিক জীবনে বৃদ্ধি পেয়ে রেটিনা গঠন করে। রেটিনোব্লাস্টোমা এই কোষগুলো বৃদ্ধির হারকে প্রভাবিত করে এবং তাদের দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধি করে। রেটিনোব্লাস্টোমা প্রায়ই জিনের পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত। বংশগত কারণেও হতে পারে এই রোগ। পরিবারের কারো এই রোগ থাকলে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৫০ শতাংশ বেশি।
Leave a Reply