মনির হোসেন, বেনাপোলঃ
গরমে অতিষ্ঠ জনজীবনে স্বস্তি দিতে যশোরের বেনাপোল পৌরসভা ও শার্শা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে মিলছে সুস্বাদু তালের শাঁস। দামে সস্তা হওয়ায় বিক্রি হচ্ছে ব্যাপক হারে।
এদিকে প্রচুর পরিমাণে তালের শাঁস বিক্রি হওয়ায় উপজেলায় পাকা তালের সংকটের শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলা ও পৌর এলাকার প্রায় ৩০ হাজার গাছে তাল হয়েছে। পাকার আগেই অধিকাংশ গাছের তাল বিক্রি করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট ছোট বাজার ও বেনাপোল পৌরসভার এলাকার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে তালের শাঁস। ছোট বড় প্রকার ভেদে প্রতি পিস ৫ থেকে ৮ টাকা দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামের তাল ব্যবসায়ী আবু সাঈদ বলেন, গ্রামে গ্রামে ঘুরে গাছ মালিকদের সঙ্গে দরদামের পর তাল কেনা হয়। এরপর ভ্যানে করে বেনাপোল বাজারের বিভিন্ন মোড়ে গিয়ে শাঁস বিক্রি করা হয়। প্রচণ্ড গরমের কারণে এবার তালের শাঁসের চাহিদা বেশি। প্রতিদিন ৭০০ থেকে এক হাজার টাকার শাঁস বিক্রি হয়। মুনাফা হয় অর্ধেক।
উপজেলার লাউতাড়া গ্রামের চা বিক্রেতা রফিক মিয়া বলেন, প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরু থেকে চা বিক্রি বন্ধ রেখে তালের শাঁস বিক্রি শুরু করি। গ্রামের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে একটু বেশি দামে কেনা হলেও বিক্রি ও মুনাফার পরিমাণ ভালো।
বাগআচড়া বাজারের তাল বিক্রেতা সোহরাব শেখ বলেন, গাছ থেকে ফল কেটে নামানো অনেক কষ্টকর কাজ। একটি গাছে ছোট বড় মিলিয়ে ২০০ থেকে ৩০০টি তাল পাওয়া যায়। জ্যৈষ্ঠ মাসজুড়ে তা বিক্রি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, যে পরিমাণে তালের শাঁস বিক্রি শুরু হয়েছে, জ্যৈষ্ঠ মাস শেষে পাকা তাল খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।
বেনাপোল পৌরসভার, বেনাপোল গ্রামের তালের শাঁস কিনতে আসা বাসিন্দা প্রফেসর সাইদুজ্জামান লিটন বলেন, পরিবারের সবাই তালের শাঁস খুব পছন্দ করেন। এই গরমে তালের শাঁস যেমন উপকারী তেমন খেতে সুস্বাদু। ১০ পিস শাঁস ৫০/৬০ টাকায় কিনেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপককুমার সাহা বলেন, তালগাছ বহু গুণের এক গাছ। এর ফল ও বীজ দুটোই খাওয়া যায়। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও বজ্রপাত রোধে গাছটির ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা ও পৌর এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার গাছে চলতি মৌসুমে তাল হয়েছে। তবে যে পরিমাণ তালের শাঁস বিক্রি শুরু হয়েছে, তাতে পাকা তালের সংকটের শঙ্কা রয়েছে।
Leave a Reply