মুহাম্মদ জাবেদ হোসাইন বিপ্লব চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

আজাদীর অনুসন্ধানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে:

১) লোহাগাড়া মডেল মসজিদে ইমাম পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে থাকার কারণ:
ইমাম নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী
মো. আবদুল গফুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বহাল তবিয়তে থেকে মডেল মসজিদে নিয়োগবিহীন ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সাবেক সংসদ সদস্য নদভীর নির্দেশে মৌখিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত (!!) হয়ে প্রভাব খাটিয়ে ইমামের পদও ছাড়ছেন না তিনি। আবার যোগদানও করছেন না। বিভিন্ন কূটকৌশলে প্রভাব খাটিয়ে মেধাক্রমে অন্য প্রার্থীদেরও ইমাম পদে যোগদান করতে দিচ্ছেন না নিয়োগবিহীন বর্তমান এই ইমাম।
নিয়োগবিধিতে উল্লেখ রয়েছে পাশাপাশি সরকারি অনুদানপুষ্ট অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারবেন না।
**সাবেক সংসদ সদস্য নদভীর নির্দেশে মৌখিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত(!!) এই ইমামের খুঁটির জোর কোথায়? এ থেকে লোহাগাড়ার মানুষের পরিত্রাণের উপায় কী?

২) মডেল মসজিদের ৩য় তলা দখল করে অনুমোদনহীন প্রাইভেট হেফজখানা:
লোহাগাড়া উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের তৃতীয় তলায় মহিলাদের নামাজ কক্ষ দখল করে চালু করা হয়েছে প্রাইভেট হেফজখানা। এতে মহিলারা বঞ্চিত হচ্ছেন মসজিদে নামাজ আদায়ের সুযোগ থেকে। চলতি সনের ২০ এপ্রিল থেকে মাওলানা আবদুল গফুর দীর্ঘদিন যাবত মসজিদের তৃতীয় তলা দখল করে সেখানে প্রাইভেট হেফজখানা পরিচালনা করছেন। এতে মডেল মসজিদের মহিলা নামাজ আদায়ের কক্ষসহ পুরো তৃতীয় তলা তার দখলে চলে যায়। উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে পরিচালিত হলেও ব্যক্তিগত হেফজখানা পরিচালনার জন্য ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের কারো কাছ থেকে অনুমতি নেয়া হয়নি।

৩) আজাদীর অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, তৎকালীন লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের পাশে কয়েকটি দোকানঘরের ভাড়া নিয়ে মসজিদের ব্যয়ভার পরিচালনা হতো। বর্তমানে ওই স্থানে উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হয়েছে। মসজিদের ব্যয়ভার পরিচালনার জন্য বর্তমানে সেখানে ১১টি দোকানঘর রয়েছে। পূর্বে প্রতি বর্গফুট ৮ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হলেও চলতি মাস থেকে প্রতি বর্গফুট ১০ টাকা করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মাসে ৭টি দোকান থেকে নতুনভাবে ১ লাখ টাকা করে অগ্রিম নেয়া হয়েছে। এসব দোকানের ভাড়া মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন রশিদের মাধ্যমে উত্তোলন করেন। বর্তমানে মসজিদে মোটা অংকের বিদ্যুৎ বিল অপরিশোধিত রয়েছে। মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের অধীনে আয়–ব্যয়ের হিসাব উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও তাদেরকে কেউ কোন হিসাব দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। ফলে মসজিদের আয়–ব্যয়ের সঠিক হিসাব কারো কাছে পাওয়া যাচ্ছে না।
** এই ১১টি দোকান ভাড়ার টাকা কার কার পকেটে যায়?

৪) জুমাবারে মুসল্লীদের বাইরে নামাজ পড়তে হয়:
আরো জানা যায়, উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নিচ তলায় হেফজখানার ডাইনিং রুম, রান্নাঘর করা হয়েছে, তৃতীয় তলায় চলে পাঠদান। মসজিদের ইমাম মাওলানা আবদুল গফুর তৃতীয় তলার পুরোটায় দখলে নিয়েছেন।
এছাড়া মডেল মসজিদ মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় প্রতি শুক্রবার বহু গাড়ির যাত্রীরা জুমার নামাজ আদায় করতে সেখানে থামেন। মসজিদের ভেতর জায়গা না পেয়ে বাহিরে খোলা আকাশের নিচে জুমার নামাজ আদায় করতে হয় মুসল্লীদের।

শীঘ্রই মডেল মসজিদে স্থায়ী ইমাম নিয়োগ, মহিলাদের নামাজের স্থান খালি করে প্রাইভেট হেফজখানা অন্যত্র স্থানান্তরসহ অন্যান্য বিষয়ে সুন্দর সমাধান কামনা করছি।