1. admin@somoybelanews.com : somoyadmin :
বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ০৪:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
জেলা যুবদল নেতা আমিরুল ইসলাম ইমনের ঈদ শুভেচ্ছা ধন্যবাদ আসছে ঈদ মোবারক। সুজানগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত কালীগঞ্জে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সূধী সমাবেশ বিএনপিকে কখনোই নেতৃত্বশুন্য করা যায় নাই-অধ্যাপক মামুন মাহমুদ আওয়ামী লীগ নেতা মানব পাচার কারি ও আদম ব্যবসায়ি মোশারফ গং এর খপ্পরে পরে নিঃস্ব একাধিক পরিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে লবণ ও চামড়া ব্যবসায়িদের সাথে ডিসি’র মতবিনিময় মিথ্যা মামলায় আজহারুল ইসলাম খালাস পাওয়ায় দিনাজপুর জামায়াতের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত ওসমানীনগরে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের উদ্বোধন দিাজপুর চেম্বারের উদ্যোগে ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

এক লাখ কোটি টাকার কোরবানির অর্থনীতি

  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৮ জুন, ২০২৪
  • ২২৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশে কোরবানির ঈদের অর্থনীতি এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এই সময়ে প্রবাসী আয়ও দেশে বেশি আসে। আর কোরবানির গরুর উৎপাদন মূলত গ্রামকেন্দ্রিক। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করতে কোরবানির ঈদ বড় ভূমিকা রাখে।

রাজবাড়ির কালুখালি থেকে ঢাকার গাবতলি গরুর হাটে ২৭টি গরু নিয়ে এসেছিলেন মো. নুরুল ইসলাম। তার সঙ্গে আরো চারজন ছিলেন। তারা কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করেই গরুর ব্যবসা করেন। ওই গরুগুলো তার ছয়-সাত মাস আগে কিনে লালনপালন করে এখন বিক্রি করছেন।

তার কথায়, আমাদের এলাকার অনেকেই আছেন যারা আমরা মতো কোরবানি কেন্দ্রিক গরুর ব্যবসা করেন। অনেক গৃহস্থও আছেন যারা দুই-তিনটা গরু পোষেন কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য। আমাদের সারা বছরের আয়ের এটা একটা বড় উৎস। এক লাখ টাকায় কয়েকটি গরু কিনে ছয় মাস পর বিক্রি করলে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি গরুতে ২৫-৩০ হাজার টাকা থাকে।

কুষ্টিয়ার রিয়াজুল ইসলামের নিজেরই একটি ছোট খামার আছে। সেই খামারের ২০টি গরু নিয়ে এসেছেন তিনি ঢাকার হাজারিবাগের হাটে। এরমধ্যেই ১৩টি গরু তিনি বিক্রি করেছেন। তার গরুগুলো এক লাখ থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকার মধ্যে। তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় এখন অনেক ছোট ছোট খামার গড়ে উঠেছে। সেই সব খামার কোরবানির জন্যই গরু লালন পালন করা হয়। অনেক পরিবারের আর্থিক অবস্থা ফিরে গেছে।

আর মো. আনিসুর রহমান তরুণ তিনটি গরু নিয়ে এসেছেন ফরিদপুর থেকে। তিনি কোরবানিতে বিক্রির জন্য এই তিনটি গরু লালনপালন করেছেন। তিনি বলেন, আমরা মতো অনেকেই এখন ছেলে-মেয়ের বিয়ে শাদী, লেখাপড়া বা ঘর মেরামতসহ নানা কাজে বাড়তি টাকার জন্য গরু পোষেন। ছাগলে লাভ কম তাই গরুর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। এবছর এক কোটি ২০ লাখ গরু, ছাগল ও ভেড়াসহ বিভিন্ন গবাদি পশু কোরবানি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেন বলেন, দেশে প্রান্তিক কৃষক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে ১৭ লাখ ছোট বড় খামার আছে। ১২ লাখ হলেন একদম প্রান্তিক কৃষক। এর সঙ্গে এক কোটি লোক যুক্ত। এটা গ্রামীণ অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে।

তার কথায়, দেশে বছরে যে এক কোটি ২০ লাখ গরুর চাহিদা তারমধ্যে ৫০-৫৫ লাখ কোরবানির সময় লাগে। ফলে কোরবানির ঈদে অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ঈদের সময় ৭৫ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। তারমধ্যে ৬০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন গবাদি পশু কেন্দ্রিক।

তিনি জানান, ২০২১ সালে করোনার মধ্যেও কোরবানির ঈদের আগে লকডাউন তুলে দেয়া হয়েছিলো এই কোরবানির ঈদের অর্থনীতির কথা চিন্তা করে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজাজ্জামান বলেন, নানা দিক থেকে বিবেচনা করলে এখন কোরবানির ঈদের অর্থনীতির আকার এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ৭৫ হাজার কোটি টাকার হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংকের পুরনো হিসাব। কারণ গবাদি পশু ছাড়াও এরসঙ্গে আরো অনেক বিষয় যুক্ত হয়েছে। এখানে মশলার বাজার আছে, কসাইদের আয় আছে, পশু খাদ্যের ব্যবসা আছে। আর কম হলেও এই ঈদেও মানুষ নতুন পোশাক কেনে।

তার কথায়, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে কোরবানির পশু এখন ফিক্সড ডিপোজিটের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। গৃহস্থ, ছোট ছোট কৃষক চার-পাঁচটি গরু লালনপালন করে কোরবানির বাজারে বিক্রি করে। এখান থেকে বছরে সে ভালো পরিমাণ অর্থ আয় করে। যা গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করছে।

তিনি বলেন, কোরবানির গরুসহ গবাদি পশুর মানও ভালো। কারণ এগুলো যত্ন নিয়ে লালন পালন করা হয়।

ঈদের অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুঈদ রহমান। তিনি বলেন, আমার বিবেচনায়ও কোরবানির ঈদের অর্থনীতির এখন এক লাখ কোটি টাকার কম হবেনা। ঈদসহ যেকোনো উৎসবেই বাংলাদেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। কিন্তু কোরবানির ঈদের বিশেষত্ব হলো গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়।

তার কথায়, এর সঙ্গে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যায়। আমাদের চামড়া শিল্পের প্রায় ৫০ ভাগ চামড়াই এই সময় সংগ্রহ করা হয়। আর মানসম্পন্ন চামড়ার প্রায় শতভাগই এই সময়ে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শহীন আহমেদ বলেন, এবার কোরবানির ঈদে বিভিন্ন ধরনের ৭৫ লাখ চামড়া সংগ্রহ হতে পারে। গত বছর ৮৫ লাখ চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছিলো কোরবানির ঈদে। এবার অর্থনৈতিক কারণে কোরবানি কম হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। আর চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয় বছরে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলারের।

ড. মুঈদ রহমান বলেন, এখন গরুর ফেলে দেয়া নাড়িভুঁড়িসহ বিভিন্ন অংশও বিদেশে রপ্তানি হয়। প্রতিবছর এখন প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকার এই ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়।

এদিকে, কোরবানির ঈদের আগে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যায়। চলতি জুন মাসের প্রথম ১২ দিনেই ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪৬ কোটি ডলার। ঈদ পর্যন্ত আরো আসবে। আর গত মে মাসে এসেছে ২২৫ কোটি ডলার যা গত ৪৬ মাসে সর্বোচ্চ।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, দুই ঈদ এবং পহেলা বৈশাখ এই তিনটি বড় উৎসবে আমাদের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। এর বড় কারণ টাকার লেনদেন বেড়ে যায়। কোরবানিতে গরু আমাদের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে অর্থের সরবরাহ বাড়ায়। গ্রামের পশু শহরে আসে। শহরের টাকা গ্রামে যায়। গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। আরেকটি ব্যাপার হল রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ে। এর প্রভাব পড়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মানুষের হাতে টাকা আসে। ক্রয় ক্ষমতা বাড়ে।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাজেটে যেমন কেন্দ্র থেকে অর্থ যায় গ্রামে। এখানে ঠিক উল্টো। গ্রামের মানুষের রেমিট্যান্স কেন্দ্রে চলে আসে।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন

© All rights reserved © 2024

কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি